তৈরি হচ্ছে আরেক টাইটানিক
টাইটানিক ডুবে যাবার ঠিক একশ
বছর পর আবার তৈরি হচ্ছে অবিকল সেই জাহাজ। আগামী ২০১৬ সালে যাত্রা করতে
যাচ্ছে ‘টাইটানিক’-এর
উত্তরসূরি ‘টাইটানিক ২’। এতে থাকছে ৮৪০টি অত্যাধুনিক
সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বিলাসবহুল রুম, সুইমিংপুল, জিমনেশিয়াম এবং রেস্টুরেন্ট। ‘টাইটানিক ২’ হবে
লম্বায় ৮৮৫ ফুট এবং এর ওজন হবে ৪০ হাজার টন। এই জাহাজে আরও থাকবে ‘টাইটানিকের মতো সেই পুরনো আমলের আদলে তৈরি একটি কয়লাচালিত ইঞ্জিনঘর, যা জাদুঘর হিসেবে স্থাপন করা হবে। নতুন জাহাজটির
আসল ইঞ্জিন ঘর হবে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়। অবিকল সেই গড়ন। একই দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, একই উচ্চতা। সেই টাইটানিকের মতো এটিরও থাকবে হুবহু নয়টি তলা। ডুবে যাওয়া মূল টাইটানিকের মতই এটিও প্রথমেই ভ্রমণে যাবে ইংল্যান্ড থেকে উত্তর অ্যামেরিকার পথে। জাহাজটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ব্লু স্টার লাইন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘সেই টাইটানিক তৈরি করতে যেসব নারী-পুরুষ কাজ করেছিলেন, তাদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তৈরি হচ্ছে এই নতুন টাইটানিক।’ সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ লন্ডন থেকে
নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করবে নতুন
টাইটানিক। তবে এর
নির্মাণ ব্যয় কত পড়বে তা জানা যায়নি।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রমোদতরি টাইটানিকও ঘোষণা দিয়েছিল যে, এটি ডুববে না। কিন্তু প্রথম ভ্রমণেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জাহাজটি। ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল (১৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে) হিমবাহের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে
অ্যাটলান্টিকের অতলে হারিয়ে যায় দুনিয়ার
সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে বিলাসবহুল সে জাহাজ। জাহাজটি ডুবে যায়। আর এ ঘটনায় প্রাণ হারায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ।
টাইটানিকের তৃতীয় শ্রেণি বাস্তবে যত না আলোচনার কারণ হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি আলোচিত হয়েছে জেমস ক্যামেরনের রেকর্ড
ভঙ্গকারী জনপ্রিয় সিনেমা ‘টাইটানিক’। এই চলচ্চিত্রেই তৃতীয় শ্রেণির যাত্রী জ্যাকের সঙ্গে
ডিলাক্স শ্রেণির যাত্রী রোজের প্রেম কাহিনী নাড়া দিয়েছিল
সারা দুনিয়াকে। তৃতীয় শ্রেণির আইরিশ মজুর শ্রেণির যাত্রীদের প্রাণখোলা
হই-হুল্লোড় আকৃষ্ট করেছিল রোজকে। একই সঙ্গে টেনেছিল দর্শকদের মনও। তাই তাঁর জাহাজে এমন তৃতীয় শ্রেণি অতিরিক্ত আকর্ষণের কারণ হবে বলে আশা করেছেন ক্লাইভ
পামার। একেবারে আগের মতোই এখানেও স্টু, আলুর ঝোল আর দেদার আইরিশ নাচের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে। এছাড়া এই জাহাজে আরও দুটি শ্রেণি থাকার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একটি ডিলাক্স
ও অন্যটি প্রথম শ্রেণি।
জাহাজের ডিলাক্স শ্রেণির বর্ণনা দিতে গিয়ে মালিক নিজেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তবে এমন লোভনীয় জাহাজে ডিলাক্সের মজা ছেড়ে তথাকথিত তৃতীয় শ্রেণিতে কেন যাবেন যাত্রীরা? এ নিয়ে অবশ্য বেশ চিন্তায় ছিল কর্তৃপক্ষ। পরে জানা গেছে, আগের মতো পরিবেশ তৈরি করতে অন্তত এক হাজার যাত্রীকে
রাজি করানো গেছে। আর
সিনেমার অনুকরণে এবারেও জ্যাক-রোজের কাহিনীর পুনরাভিনয় হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও চলছে রসিকতা। ১০৪ বছর আগের মতো এবারও ব্রিটিশ যাত্রীবাহী ও
মালবাহী জাহাজ সংস্থা ‘ব্লু
স্টার লাইন’-এর পতাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করবে টাইটানিক-২।
ক্লাইভ পালমার কুইন্সল্যান্ডের একজন খনি ব্যবসায়ী। বর্তমানে পর্যটন শিল্পেও তার ব্যবসা ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। কয়েকটি প্রমোদতরী নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তার। চীনের সঙ্গে তার জোরালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।
No comments:
Post a Comment