ঝুলন্ত
সেতু
পথের মাঝে নদী। যোগাযোগের জন্য তখন সেতুই ভরসা। পাহাড় থেকে পাহাড়ে যাতায়াতের জন্যও এ ধরনের সেতুর দরকার হয়। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের 'টাইটিলস ক্লিফ ওয়াক' সেদিক থেকে একেবারেই ভিন্ন। এ সেতুর প্রধান সৌন্দর্যই হলো আতঙ্ক। তাই এ সেতুটি অন্য সেতুগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা। অবশ্য এ সেতুটি নির্মাণের আগে থেকেই সবার জল্পনা-কল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর ডিজাইন দেখেই অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন এ ধরনের সেতু আদৌ নির্মাণ সম্ভব কিনা। একে তো অনেক উঁচুতে ঝুলে থাকবে এটি তাছাড়া,
মেঘের ভেতর দিয়ে চলাচলের জায়গার আবহাওয়া ঠিক পর্যটক বা পারাপারকারীদের জন্য অনুকূল থাকে না বেশির ভাগ সময়ই। অনেকেই বলে থাকেন এটি শুধু সেতু নয় যেন মেঘের বাড়ি। এ সেতু ব্যবহারকারীরা ঠিকই মেঘের ভেতর দিয়েই হাঁটেন। বিখ্যাত আল্পস পর্বতমালার ওপর অদ্ভুত এ সেতুটিকে বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর সেতু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। 'টাইটিলস ক্লিফ ওয়াক' নামের এই সেতুটি সুইজারল্যান্ডের অন্যতম আকর্ষণীয় সেতু এবং পর্যটকদের ভিড়ে মুখর থাকে। এ সেতুর ভয়ঙ্কর ডিজাইনই আকর্ষণের মূল কারণ। পৃথিবীতে যতগুলো ঝুলন্ত সেতু আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সেতুর তালিকায় এটিকেই রাখা হয় সবার উপরের দিকে।
সেতুর নিচে রয়েছে বরফের অতিকায় হিমবাহ আর এ জন্যই সাক্ষাৎ মৃত্যুর আতঙ্ক এই উঁচু সেতুটিতে সবচেয়ে বেশি। ঝুলন্ত এ সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩৩০ ফুট হলেও প্রস্থে মাত্র তিন ফুট। এ কম প্রস্থের কারণে পাশাপাশি দুজন হেঁটে যাওয়াই কঠিন। ১২ কোটি ৯৩ লাখেরও বেশি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে সেতুটি। এটি বানানো হয়েছে এঞ্জেলবার্গ ও গারস্লিনাপ নামের দুটো শহরের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম ক্যাবল কার চালুর শততম বার্ষিকী উপলক্ষে। ক্যাবল কারটি চালু করা হয়েছিল ১৯১৩ সালে। সেতুটি নির্মাণকালে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত বৈরী আবহাওয়াতে যেন এটি নিরাপদ থাকে সেদিকেই বেশি নজর দেওয়া হয়েছিল। প্রায় পাঁচ মাস নিরলস পরিশ্রমের ফলাফল এটি। টাইটিলস ক্লিফ ওয়াক নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পিটার রেনিল। এ সেতুটি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরে ঝুলে আছে।
No comments:
Post a Comment