♥ ভ্যালেন্টাইনস ডে ♥
কিংবদন্তি হল, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন রোমে
তঋতীয় শতাব্দীর সময় ধর্ম যাজক হিসেবে কাজ করছিলেন । সেই সময় সম্রাট দ্বিতীয়
ক্লডিয়াস তার সেনা শক্তিশালী হিসেবে গড়েতোলার জন্য তরুণদের বিয়েকে আইন বহির্ভূত
বলে ঘোষণা করলেন । তিনি মনে করতেন – অবিবাহিত পুরুষরা, যাদের স্ত্রী এবং
সংসার আছে তাদের চেয়ে , অধিকতর উন্নত যোদ্ধা হতে পারে। ভ্যালেন্টাইন এই আইন জারিকে
অনঐতিক বলে বিবেচনা করেন।তিনি ক্লডিয়াসের সিদঢ ণ্টে বিরধিতা করেন এবং ত্রন
পেরমিকদের বিইয়ে স্মপ্নন ক্রা র কাজটি
গপ্নে চালিয়ে ্যেতে
থাকেন।ভ্যালেন্টাইনের কায্ররক্লাপ প্রকাশ পেলে ক্লডিয়াস তাকে
মৃতূদন্দাডদেশ দেন। আরেক তথ্য থেকে ইঈইত
পাওয়া যায়, রমান বন্দিশালায় নির্যাতিত খ্রিস্টানদের মুক্তি পাওয়ার প্রচেষ্টা
চালাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। অন্য একটি লোককাহিনীর মতে , ভ্যালেন্টাইন নিজেই মূলত
নিজেকে ভ্যালেন্টাইন শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। কারাগারে বন্দি থাকার সময় ভ্যালেন্টাইন
এক তরুণীর প্রেমে পড়েন বলে ধারণা করা হয়- তরুণীটি ছিল কারাধ্যক্ষের মেয়ে । সে
কারাভ্যন্তরেই ভ্যালেন্টাইনের সাথে দেখা করত ।
মৃত্যুর আগে তিনি তরুণীটির কাছে
চিঠি লেখেন, যার শেষে স্বাক্ষর ছিল ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন এটি এমন এক অভিব্যক্তি
যা এখনও ব্যবহৃত হয়। কিংবদন্তির আড়ালে ভ্যালেন্টাইন অস্পষ্ট, ধোঁয়াটে- তবে তার
কাহিনী বা উপকথা নিশ্চিতভাবেই তাকে প্রকাশ করে সহানুভূতিস্মপ্নন, বীরোচিত এবং
সর্বোপরি রোমান্টিক ব্যক্তি হিসেবে । এটা সত্য যে, মধ্যযুগে ভ্যালেন্টাইন ইংল্যান্ড
ও ফ্রান্সে সর্বাধিক জনপ্রিয় সেইন্টদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। কেউ কেউ মনে করেন
ভ্যালেন্টাইন্স ডে উদযাপিত হয় ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভ্যালেন্টাইনের মুতূয় বাশির্কীর
স্ম্রনে – স্মভবত যেটা সংগঠিত হয়েছিল ২৭০ খ্রিস্টাব্দের
দিকে। প্রাচীন
রোমে বসন্তকালের শুরু ছিল ফেব্রুয়ারি মাস । পবিত্রতার সময় হিসেবে এটিকে বিবেচনা
করা হতো । বাড়িঘর আনুষ্ঠানিকভাবে ধোয়ামোছা করা হতো , এরপর লবণ ও এক জাতীয় মিহি
ময়দা ভেতরে ছিটিয়ে দেয়া হতো । লুপারকালিয়ার ধারণা জন্ম নেয় ফেব্রুয়ারিতে । ১৫
ফেব্রুয়ারি উর্বরতার উৎসব ছিল, যা উৎসর্গ করা হতো রোমান শস্যদেবতা ফনাস এবং
রোমান জাতির প্রতিষ্ঠাতা রমোলাস ও রোমাসকে। ৪৯৮ খ্রিস্টাব্দের দিকে পোপ গেলাসিয়াস
১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে ঘোষাণা দেন। মানব-মানবীর জুটিবদ্ধ হবার
রোমান লটারি সিস্টেমকে অখ্রিস্টীয় এবং আইন বহির্ভূত গণ্য করা হলো । পরে মধ্যযুগে ফ্রান্সে
এবং ইংল্যান্ডে বিশ্বাস জন্মে যে, ১৪ ফেব্রুয়ারি পাখিদের প্রেম-বন্ধনের ঋতু, আর
সেখানে থেকেই চালু হলো ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভ্যালেন্টাইন’স ডে
বা রোমান্সের দিবস হিসেবে পালনের রীতি। কতশতকাল আগে থেকে চেনা ভ্যালেন্টাইন
অস্তিত্বমান হয়ে উঠল চার্লস ( ডিউক অব অরলিনস)- এর লেখা কবিতায়। কবিতাটি তার
স্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল, ব্যাটল অব আজিনকোর্ট – এ বন্দি হয়ে যখন তিনি
টাওয়ার অব লন্ডনে । এই উপহারটি লিখিত হয়েছিল ১৪১৫ সালে, এখন সেটা ব্রিটিশ
লাইব্রেরি অব লন্ডনের পাণ্ডুলিপি সংগ্রহশালায় রক্ষিত আছে। কথিত আছে, কয়েক বছর পর
রাজা পঞ্চম হেনরি নিযুক্ত করেন জন লিজেট নামক একজন লেখককে –
ভ্যালেন্টাইন নোট কম্পোজ করার জন্য। সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে গ্রেট ব্রিটেনে
ভ্যালেন্টাইন’ স ডে পালন করা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ।
অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সকল শ্রেণীর বন্ধু- বান্ধব এবং প্রেমিক- প্রেমিকাদের
মধ্যে মমতার ছোট স্মৃতিচিহ্ন কিংবা হাতে লিখিত স্মারকলিপি বিনিময় সাধারণ প্রথায়
দাঁড়িয়ে যায়। এই শতাব্দীর শেষের দিকে মুদ্রণ প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে হস্তলিখিত
পত্রের জায়গায় মুদ্রিত কার্ডের আদান- প্রদান শুরু হয় । এক পররযায়ে ভালবাসার বাণীসহ
ছাপানো কার্ড প্রদান আবেগ প্রকাশের জন্য সহজপন্থারূপে দেখা দেয় । ডাক বিভাগ অল্প
খরচের মাধ্যমে ভ্যালেন্টাইনস ডের অভিনন্দন প্রকাশে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে
অবদান রাখে। হাতে-তৈরি ভ্যালেন্টাইনস উপহার প্রদান আমেরিকানদের মধ্যে শুরু হয়
সপ্তদশ শতকের শুরুতে। ১৮৪০ সালে ইস্টার এ. হল্যান্ড ভ্যালেন্টাইনস উপহার বিক্রয়
শুরু করেন আমেরিকাতে। গ্রিটিংস কার্ড এসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় ,
প্রতিবছর এক বিলিয়নের বেশি কার্ড পাঠানো হয় ভালবাসা দিবসে। ভ্যালেন্টাইনস ডে এখন
ক্রিসমাসের বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কার্ড বিনিময়ে উৎসবে পরিণত হয়েছে । আনুষ্ঠানিকভাবে
ভ্যালেন্টাইন’স ডে উদযাপিত হয় মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্র সহ
কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ায় । ব্যাপক হারে না হলেও
আধুনিক বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ দিবসটিতে আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।
♥ জানা – অজানার
ভালোবাসা দিবস ♥
♦ ৪৯৮
খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ভালবাসা দিবস
হিসেবে ঘোষণা দেন।
♦ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ভ্যালেন্টাইন্স
কার্ডটি সংরক্ষিত আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে । নরম্যান্ডির ডিউক চালরস টাওয়ার অব
লন্ডনে বন্দি থাকা অবস্থায় ১৪১৫ খ্রিস্টাব্দে তার স্ত্রীকে ভ্যালেন্টাইন শিরোনামে
একটা কবিতা লিখে পাঠান। ধারণা করা হয় এটাই প্রথম ভ্যালেন্টাইনস কার্ড।
♦রোমান প্রেম উৎসবের নাম লুপাক্যালিয়া
♦গ্রেট ব্রিটেনে ভ্যালেন্টাইনস ডে
জনপ্রিয়তা পায় সপ্তদশ শতাব্দীতে। মেয়েরা এদিন একটা সেদ্ধ ডিম খেত আর পাঁচটা পাতা
বালিশের ওপর মাথা রেখে ঘুমাতো। তাদের বিশ্বাস ছিল এতে তারা মনের মতো স্বামী পাবে।
♦ অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে ভ্যালেন্টাইনস ডে’র
উপহার বিনিময় শুরু হয়।শতাব্দীর শেষদিকে ছাপাখানার উন্নতি হলে কার্ড ব্যবহার শুরু
হয়। ১৮৪০ সালে ইস্টার এ হল্যান্ড নামে এক ব্যক্তি নানা ধরনের কার্ড ও উপহার
সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে একে জনপ্রিয় করে
তোলেন ।
♦ রোমান
সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস সৈন্য সংগ্রহ অভিযান সফল করার উদেদশ্যে যুবকদের বিয়ে
নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন । তার এই মতের বিরোধিতা করেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। তিনি গোপনে
বিরহ কাতর যুবক-যুবতীদের বিয়ে পড়াতেন। এজন্যে তাকে কারাগারে যেতে হয় ।
যুবক-যুবতীরা ভ্যালেন্টাইনের প্রতি সহমররমিতা জানাতে কারাগারে ফুল ও চিরকুট পাঠাত।
সম্রাট শেষ পররযন্ত ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। যুবক –
যুবতীরা ভ্যালেন্টাইনের প্রতি সম্মান জানাতে তার ফাঁসির দিনটাকে ভ্যালেন্টাইনস ডে
হিসেবে পালন করে আসছেন ২৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে।
♥ উত্তর
আমেরিকায় ভ্যালেন্টাইন’স ডে ♥
উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপনকারীরা ভ্যালেন্টাইনস ডে
পোস্টকার্ড উত্তর আমেরিকায় আমদানি করেছিল । যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম যন্ত্রাদির
সাহায্যে বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত ভ্যালেন্টাইন উপহার হিসেবে
চিত্রশোভিত ফিতা দ্রুত বিক্রয় হয় ১৮৪৭ সালের পর, ইস্টার হল্যান্ড কররতৃক । তার
পিতা বিশাল বই ও মুদি দোকান চালাত। একজন ইংরেজ ভ্যালেন্টাইনের কাছ থেকে সে এ
অনুপ্রেরণা পায় । ২০০১ সাল থেকে গ্রিটিং কার্ড এসোসিয়েশন প্রতিবছর ইস্টার হল্যান্ড
এওয়ার্ড ফর আ গ্রিটিং কার্ড ভিশনারি’ অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। বিংশ
শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্র কার্ড বিনিময়ের প্রথায় যুক্ত হয় সকল প্রকার
গিফট, সাধারণত পুরুষের কাছ থেকে নারীর প্রতি এ ধরনের গিফটের মধ্যে যুক্ত হয় গোলাপ
এবং চকোলেট। ১৯৮০ সালে ডায়মন্ড ইন্ডাস্ট্রি ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপলক্ষে
জুয়েলারি উপহার প্রদান শুরু করে। দিবসটি এসেছে প্ল্যাটোনিক গ্রিটিং এর চিহ্ন হয়ে,
ভ্যালেন্টাইন’স ডে। কখন ও কখনও বলা হয়ে থাকে, ভ্যালেন্টাইন’স ডে হচ্ছে
অবিবাহিতদের সতর্কতার দিন। উত্তর আমেরিকার অনেক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়ে
থাকে প্রত্যেক যেন একটা কার্ড কিংবা ছোট উপহার আরেকজনকে দেয়। ওই সব কার্ডে মাঝে – মধ্যে উল্লেখ
থাকে তারা কীভাবে পরস্পরকে মূল্যায়ন করে থাকে।
No comments:
Post a Comment