গোপন অভিসারে শাকিব-অপু
কিন্তু এবার হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই জুটি। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের। এমনকি তাদের দুজনের মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যাচ্ছে না। আর তাই দুজনের একসঙ্গে উধাও হয়ে যাওয়ায় গুঞ্জনকে সত্যি বলেই মনে করছেন অনেকেই। পাশাপাশি দুজনের উধাও হয়ে যাওয়াটা অনেকে গোপন অভিসার বলেও ধরে নিয়েছেন।
চিত্রনায়ক শাকিব খানের সহকারী মনির জানিয়েছিলেন, ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার বাইরে গেছেন শাকিব। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় অবস্থান করছেন তা জানা যায়নি। তবে এ বক্তব্য দেওয়ার পর থেকে সহকারী মনিরকে ফোন করে তার ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে জনপ্রিয় এই জুটির একই সময়ে উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ও শাকিব অপুর নিকটজনদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালক জানিয়েছেন, অপু বিশ্বাস তার গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেন। এর আগেও তিনি এরকম করে গিয়েছিলেন।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অপুর প্রতি শাকিবের ভালো লাগা কিংবা শাকিবের প্রতি অপুর ভালো লাগা ও পছন্দের ব্যাপারটি কিছুটা প্রকাশ্যই।সম্প্রতি অপু বিশ্বাস মুটিয়ে যাওয়ার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে ওজন কমিয়ে পুনরায় চলচ্চিত্র জগতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন। অপুর প্রত্যাবর্তনের পরপরই শাকিব তার প্রযোজনায় প্রথম ছবি 'হিরো দ্যা সুপার' এ অপুকে চুক্তিবদ্ধ করেন। পাশাপাশি আরো হাফ ডজন চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে তারা ফের জুটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেছেন।
তবে মনোমালিন্যও কম হয়নি দুজনের। এর আগে শাকিব প্রযোজিত ‘হিরো দ্য সুপার স্টার’-কে ঘিরেই শাকিবের ওপর নাখোশ হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। অপুর প্রত্যাশা ছিল যেহেতু এটি শাকিবের প্রথম নির্মাণ, সেহেতু এতে তাকে একক নায়িকা হিসেবে কাস্ট করা হবে এবং তার চরিত্রের গুরুত্বই থাকবে বেশি। কিন্তু শাকিব যে গল্প নির্বাচন করেছেন তাতে তার বিপরীতে দুই নায়িকা। এছাড়া অপুর চরিত্রের ব্যাপ্তি নাকি অন্য নায়িকাটির চেয়ে কম। তাই শাকিবের ওপর চটেছিলেন অপু।
এরও আগে অপুর সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে তিন্নি, সাহারা, জয়া, শখ, রোমানা, ববি, মাহি, মিমসহ বেশ কয়েকজনকে নিজের বিপরীতে কাস্ট করিয়ে অভিনয় করেছেন শাকিব খান। সে সময় এ প্রসঙ্গে অপু বলেছিলেন, মাঝে আমাকে বাদ দিয়ে অনেকের সঙ্গে তো শাকিবের কাজ করা হলো। কিন্তু কই, আমার সঙ্গে জুটি বাঁধা চলচ্চিত্রের মতো সেগুলো তো দর্শকপ্রিয়তা পায়নি।সম্প্রতি চলচ্চিত্রে ফিরেই আবার তিনি শাকিবকে নিজের মতো করে ফিরে পেতে চেয়েছেন। আর তখনই গণমাধ্যমের সামনে তিনি দাবি করেছিলেন, এখন পর্যন্ত শাকিবের সঙ্গে আমার কেমিস্ট্রিই সবচেয়ে সফল।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্রে আসা শাকিব খান দর্শক নজরে আসেন ২০০৮ সালে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ‘কোটি টাকার কাবিন’ চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধার মধ্য দিয়ে। এ পর্যন্ত অপু অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৭০-এরও বেশি। এর মধ্যে শাকিবের সঙ্গে কাজ করেছেন ৯৮ ভাগ চলচ্চিত্রে। দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছে এই জুটি। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে চমৎকারভাবে জুটি গড়ে তোলা ছাড়াও প্রেমের সম্পর্কও গড়ে ওঠে দুজনের মধ্যে।
জানা যায়, তাদের সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল যে, শাকিব গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাখঢাক না রেখেই বলতেন ‘বিয়ে করব তো চলচ্চিত্র জগতে যার সঙ্গে আমার সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক তাকেই করব।
২০১১ সালের দুর্গাপূজায় অপু তার বগুড়ার বাড়িতে একমাত্র শাকিব খানকে নিমন্ত্রণ করায় তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক সবার কাছে পরিস্কার হয়ে যায়। কিন্তু মাঝে অজানা কারণে উভয়ের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এতে দুজনের জুটিবিহীন চলচ্চিত্রগুলো ব্যর্থ হতে থাকে। ফলে অপু চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান এবং অলস সময় কাটাতে মুটিয়ে যাওয়া শরীরের মেদ ঝরাতে থাকেন।চলতি বছরের ঈদে মুক্তি পায় শাকিব-অপু জুটির অনেক আগে কাজ শেষ করা ‘মাই নেম ইজ খান’ চলচ্চিত্রটি। এটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেলে নির্মাতারা এ জুটিকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে আবার আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নিজেদের ভেতরকার সমস্ত রাগ অভিমান আর দূরত্ব ভুলতেই শাকিব-অপু গোপন অভিসারে গিয়ে থাকতে পারেন।
তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে শাকিবের ওই ঘনিষ্ঠ পরিচালক বলছেন, আজ সকালেই শাকিব খানের দেশে ফেরার কথা। তবে অপু তার সঙ্গে নেই। গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় গিয়ে থাকতে পারেন। তাই, শাকিব অপুর খোঁজ মেলার আগ পর্যন্ত সব জল্পনা কল্পনাই থেকে যাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment